মো.মিজানুর রহমান টিপু ,বরগুনা জেলা প্রতিনিধি: মায়ের জম্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ১৪ জুন,ছেলের ১৯৬৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ মায়ের ৭ বছর ৭ মাস ...
মো.মিজানুর রহমান টিপু ,বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:
মায়ের জম্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ১৪ জুন,ছেলের ১৯৬৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ মায়ের ৭ বছর ৭ মাস ১৭ দিন বয়সে জন্ম নিলেন বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খান!
সর্বশেষ ভোটার হালনাগাদ তালিকায় জয়নাল আবেদীন ও তার মায়ের এ জন্ম তারিখ পাওয়া যায়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মদন গোপাল পাল বলেন,কোন মেয়ে ৮ বছর বয়সে ও মা হওয়ার তথ্য আমার জানা নেই। ভোটার হালনাগাদ তালিকায় দেখা যায়,জয়নাল আবেদীনের মাতা ছুমিনা খাতুনের জন্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ১৪ জুন(ভোটার নং ০৪০৩১৩৭১৪৬৬৪)।
আর জয়নাল আবেদীনের জন্ম তারিখ ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি(ভোটার নং ০৪০৩১৪০০০০৫৩)। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পর সে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করেছেন। তবে ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক স্বাক্ষরিত তালিকায় মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম নেই। তার পরেও ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হয়েছে। সংসদের সাবেক কমান্ডার গোলাম সত্তার সম্প্রতি জয়নাল আবেদীন খানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এতে উপজেলার ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ করেন।
বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তদন্ত করার জন্য জোর সুপারিশ করেন। অনুসন্ধানে জানাযায়,বামনা উপজেলার ছোটযাদবপুড়া গ্রামের আ.আজিজ খাঁ এর ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন খান ১৯৯০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে ভোটার হন। তখন তার বয়স ২৫ বছর, পেশা ছিল কৃষিকাজ (ভোটার ক্রমিক নং ১১৯)। সে অনুযায়ী তার জন্ম সন ১৯৬৫। আবার ১৯৯৫ সালের ৭ অক্টোবর প্রকাশিত ভোটার তালিকায় সে বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে পুনরায় ভোটার হন। তখন তার বয়স দেখানো হয়েছে ৩০ বছর, পেশা ছিল ব্যবসা(ভোটার ক্রমিক নং ০০৪০)। সে অনুযায়ী তার জন্ম সন হয় ১৯৬৫।
২০০০ সালের ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত ভোটার তালিকায় সে ওই গ্রামে আবার ভোটার হন। তখন তার বয়স ৩৫ বছর,(ভোটার ক্রমিক নং ০০১০০)। সেখানে জন্ম তারিখ দেয়া হয়েছে ১৯৬৪ সালের ৮ মে । সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর ১০ মাস ১৯ দিন! উপজেলার বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৭৮ সালের পঞ্চম শ্রেণীর ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ০৬ এপ্রিল । সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৫ বছর ১১ মাস ২১ দিন! উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম রেজিস্টার ও অনলাইনের নিবন্ধন অনুযায়ী মো. জয়নাল আবেদীন খানের জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি,(জন্ম নিবন্ধন নম্বরঃ ১৯৬৫০৪১১৯৪৭০০০২৫৪)। সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর ১ মাস ২৬ দিন।

এরপর ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পর সে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের যাত্রা শুরু করেন। এরই মধ্যে ২০০৬ সালের ২১ জুন রাতে বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় আগুনে পুড়ে যায়।
এ ব্যাপারে তৎকালীণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদার বামনা থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। যার জিডি নং ৬৪৫, তারিখঃ ২২ জুন ২০০৬। তখন আগুনে কিছু কাগজপত্র না পোড়লেও তা পাওয়া যায়নি।
তখন ১০ হাজার কপি জন্ম সনদ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে,ঐ জন্ম সনদ গুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব এর সিল এবং পরিষদের গোল সিল দেয়া ছিল। সেই জন্ম সনদ দিয়ে মো. জয়নাল আবেদীন খান তার ভুয়া জন্ম সনদ তৈরী করেন। সেই ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে ২০০৮ সালে জয়নাল আবেদীন খান জাতীয় পরিচয় পত্র করেছেন।
সেখানে জন্ম তারিখ দিয়েছেন ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, (আইডি নং ১৫৯২০৩৯৮০৯৩৭০)। ঠিকানা দিয়েছে আনোয়ারা মনোয়ারা ম্যানসরন, ডাকঘরঃ সেইনর্স কলোনী-৪২১৮, চট্টোগ্রাম পোর্ট, চট্টোগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টোগ্রাম। ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি তারিখে মুদ্রনকৃত ভোটার তালিকায় সে বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে পুনঃরায় ভোটার হন। সেই ভোটার তালিকায় তার জন্ম তারিখ দেন ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি , (ভোটার ক্রমিক নং ২৭৮, ভোটার নং ০৪০৩১৪০০০০৫৩)। ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পূর্বের সকল সরকারি-বেসরকারি রেকর্ডপত্রে তার জন্ম সন পাওয়া যায় ১৯৬৪/১৯৬৫। তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্য নেয়ার পর থেকেই তার জন্ম সন পরিবর্তনের ধারা সূচনা করেন। কিন্তু পিতা-মাতার জন্ম তারিখ সাথে সাথে পরিবর্তন না করার কারণে তার দাবীকৃত জন্মের সময় তার মাতার বয়স হয় ৭ বছর ৭ মাস ১৭দিন। বড় ভাইজোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল বলেন যে, মো. জয়নাল আবেদীন খান আর আমি একই ক্লাশে বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লেখা পড়া করেছি। আমি ১৯৮৪ সালে এসএসসি পাশ করেছি।
আর জয়নাল আবেদীন খান অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় স্কুল ত্যাগ করেছেন। বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন যে, আমি জয়নাল আবেদীন খানকে কোন জন্ম সনদ দেয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টারের লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখই সঠিক জন্ম তারিখ। ২০০৬ সালের ২১ জুন রাতে বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় আগুনে পুড়ে যায়। ঐ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাতে গিয়ে পরিষদে রক্ষিত যে জন্ম সনদ গুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব এর সিল এবং পরিষদের গোল সিল দেয়া ছিল।
সেই জন্ম সনদ দিয়ে মো. জয়নাল আবেদীন খান তার ভুয়া জন্ম সনদ তৈরী করে থাকতে পারেন। তিনি আরো বলেন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধকালীন সময় জয়নাল আবেদীন খান আমাদের সাথে ছিল না। বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান সবুজ বলেন যে, জয়নাল আবেদীন খানের জন্ম নিবন্ধন পূর্বের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের সময় করা। পরিষদের ৪ নম্বর জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টার অনুযায়ী জয়নাল আবেদীন খান এর জন্ম তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫, জন্ম নিবন্ধন নম্বরঃ ১৯৬৫০৪১১৯৪৭০০০২৫৪, নিবন্ধনের তারিখঃ ৩১ জুলাই ২০০৭। যা একই ভাবে অনলাইনে লিপিবদ্ধ আছে। তিনি আরো জানান অনলাইনের রেকর্ড কারো পক্ষে মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
অনলাইনে বর্তমানে পরিবর্তিত জন্ম তারিখ গ্রহণ করে না। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৯নং সাব সেক্টর বুকাবুনিয়ার যুদ্ধকালীণ প্রশিক্ষক ও বামনা থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সরদার মোহাম্মদ মতিন আল হোসাইনী সেলিম বলেন, বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খান আমার কমান্ডের অধীনে মুক্তিযোদ্ধা ছিল না । সে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়। এ ব্যাপারে জয়নাল আবেদীন বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম তারিখ ঠিক। আমার বিরূদ্ধে ষঢ়যন্ত্র চলছে। বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান,বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত কাযক্রম অব্যাহত আছে। তাকে বয়স প্রমানের প্রযোজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
মায়ের জম্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ১৪ জুন,ছেলের ১৯৬৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ মায়ের ৭ বছর ৭ মাস ১৭ দিন বয়সে জন্ম নিলেন বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খান!
সর্বশেষ ভোটার হালনাগাদ তালিকায় জয়নাল আবেদীন ও তার মায়ের এ জন্ম তারিখ পাওয়া যায়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মদন গোপাল পাল বলেন,কোন মেয়ে ৮ বছর বয়সে ও মা হওয়ার তথ্য আমার জানা নেই। ভোটার হালনাগাদ তালিকায় দেখা যায়,জয়নাল আবেদীনের মাতা ছুমিনা খাতুনের জন্ম তারিখ ১৯৪৮ সালের ১৪ জুন(ভোটার নং ০৪০৩১৩৭১৪৬৬৪)।
আর জয়নাল আবেদীনের জন্ম তারিখ ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি(ভোটার নং ০৪০৩১৪০০০০৫৩)। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পর সে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করেছেন। তবে ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক স্বাক্ষরিত তালিকায় মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম নেই। তার পরেও ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হয়েছে। সংসদের সাবেক কমান্ডার গোলাম সত্তার সম্প্রতি জয়নাল আবেদীন খানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এতে উপজেলার ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ করেন।
বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তদন্ত করার জন্য জোর সুপারিশ করেন। অনুসন্ধানে জানাযায়,বামনা উপজেলার ছোটযাদবপুড়া গ্রামের আ.আজিজ খাঁ এর ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন খান ১৯৯০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে ভোটার হন। তখন তার বয়স ২৫ বছর, পেশা ছিল কৃষিকাজ (ভোটার ক্রমিক নং ১১৯)। সে অনুযায়ী তার জন্ম সন ১৯৬৫। আবার ১৯৯৫ সালের ৭ অক্টোবর প্রকাশিত ভোটার তালিকায় সে বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে পুনরায় ভোটার হন। তখন তার বয়স দেখানো হয়েছে ৩০ বছর, পেশা ছিল ব্যবসা(ভোটার ক্রমিক নং ০০৪০)। সে অনুযায়ী তার জন্ম সন হয় ১৯৬৫।
২০০০ সালের ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত ভোটার তালিকায় সে ওই গ্রামে আবার ভোটার হন। তখন তার বয়স ৩৫ বছর,(ভোটার ক্রমিক নং ০০১০০)। সেখানে জন্ম তারিখ দেয়া হয়েছে ১৯৬৪ সালের ৮ মে । সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর ১০ মাস ১৯ দিন! উপজেলার বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৭৮ সালের পঞ্চম শ্রেণীর ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ০৬ এপ্রিল । সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৫ বছর ১১ মাস ২১ দিন! উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম রেজিস্টার ও অনলাইনের নিবন্ধন অনুযায়ী মো. জয়নাল আবেদীন খানের জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি,(জন্ম নিবন্ধন নম্বরঃ ১৯৬৫০৪১১৯৪৭০০০২৫৪)। সে অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর ১ মাস ২৬ দিন।

এরপর ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পর সে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের যাত্রা শুরু করেন। এরই মধ্যে ২০০৬ সালের ২১ জুন রাতে বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় আগুনে পুড়ে যায়।
এ ব্যাপারে তৎকালীণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদার বামনা থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। যার জিডি নং ৬৪৫, তারিখঃ ২২ জুন ২০০৬। তখন আগুনে কিছু কাগজপত্র না পোড়লেও তা পাওয়া যায়নি।
তখন ১০ হাজার কপি জন্ম সনদ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে,ঐ জন্ম সনদ গুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব এর সিল এবং পরিষদের গোল সিল দেয়া ছিল। সেই জন্ম সনদ দিয়ে মো. জয়নাল আবেদীন খান তার ভুয়া জন্ম সনদ তৈরী করেন। সেই ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে ২০০৮ সালে জয়নাল আবেদীন খান জাতীয় পরিচয় পত্র করেছেন।
সেখানে জন্ম তারিখ দিয়েছেন ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, (আইডি নং ১৫৯২০৩৯৮০৯৩৭০)। ঠিকানা দিয়েছে আনোয়ারা মনোয়ারা ম্যানসরন, ডাকঘরঃ সেইনর্স কলোনী-৪২১৮, চট্টোগ্রাম পোর্ট, চট্টোগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টোগ্রাম। ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি তারিখে মুদ্রনকৃত ভোটার তালিকায় সে বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট যাদবপুড়া গ্রামে পুনঃরায় ভোটার হন। সেই ভোটার তালিকায় তার জন্ম তারিখ দেন ১৯৫৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি , (ভোটার ক্রমিক নং ২৭৮, ভোটার নং ০৪০৩১৪০০০০৫৩)। ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মো. জয়নাল আবেদীন খানের নাম অর্ন্তভূক্ত হওয়ার পূর্বের সকল সরকারি-বেসরকারি রেকর্ডপত্রে তার জন্ম সন পাওয়া যায় ১৯৬৪/১৯৬৫। তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্য নেয়ার পর থেকেই তার জন্ম সন পরিবর্তনের ধারা সূচনা করেন। কিন্তু পিতা-মাতার জন্ম তারিখ সাথে সাথে পরিবর্তন না করার কারণে তার দাবীকৃত জন্মের সময় তার মাতার বয়স হয় ৭ বছর ৭ মাস ১৭দিন। বড় ভাইজোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল বলেন যে, মো. জয়নাল আবেদীন খান আর আমি একই ক্লাশে বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লেখা পড়া করেছি। আমি ১৯৮৪ সালে এসএসসি পাশ করেছি।
আর জয়নাল আবেদীন খান অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় স্কুল ত্যাগ করেছেন। বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন যে, আমি জয়নাল আবেদীন খানকে কোন জন্ম সনদ দেয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টারের লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখই সঠিক জন্ম তারিখ। ২০০৬ সালের ২১ জুন রাতে বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় আগুনে পুড়ে যায়। ঐ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাতে গিয়ে পরিষদে রক্ষিত যে জন্ম সনদ গুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব এর সিল এবং পরিষদের গোল সিল দেয়া ছিল।
সেই জন্ম সনদ দিয়ে মো. জয়নাল আবেদীন খান তার ভুয়া জন্ম সনদ তৈরী করে থাকতে পারেন। তিনি আরো বলেন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধকালীন সময় জয়নাল আবেদীন খান আমাদের সাথে ছিল না। বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান সবুজ বলেন যে, জয়নাল আবেদীন খানের জন্ম নিবন্ধন পূর্বের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের সময় করা। পরিষদের ৪ নম্বর জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টার অনুযায়ী জয়নাল আবেদীন খান এর জন্ম তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫, জন্ম নিবন্ধন নম্বরঃ ১৯৬৫০৪১১৯৪৭০০০২৫৪, নিবন্ধনের তারিখঃ ৩১ জুলাই ২০০৭। যা একই ভাবে অনলাইনে লিপিবদ্ধ আছে। তিনি আরো জানান অনলাইনের রেকর্ড কারো পক্ষে মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
অনলাইনে বর্তমানে পরিবর্তিত জন্ম তারিখ গ্রহণ করে না। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৯নং সাব সেক্টর বুকাবুনিয়ার যুদ্ধকালীণ প্রশিক্ষক ও বামনা থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সরদার মোহাম্মদ মতিন আল হোসাইনী সেলিম বলেন, বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খান আমার কমান্ডের অধীনে মুক্তিযোদ্ধা ছিল না । সে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়। এ ব্যাপারে জয়নাল আবেদীন বলেন,ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম তারিখ ঠিক। আমার বিরূদ্ধে ষঢ়যন্ত্র চলছে। বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান,বামনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার মো. জয়নাল আবেদীন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত কাযক্রম অব্যাহত আছে। তাকে বয়স প্রমানের প্রযোজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
COMMENTS